সকালে ঘুম থেকে উঠে।প্রথমে রাকিবের রুমে দিকে উঁকি দিতেই লক্ষ্য করলাম,দরজা খুলা দেখে ভিতরে প্রবেশ করলাম।রাকিব রুমে নেই। সাতসকালে আবার কোথায় গেলো।নিশ্চয়ই রাস্তায় হাঁটতে গেছে মনে হই।আনমনে ভেবে চলে আসতে যাবো হঠাৎ টেবিলের উপর একটা চিঠি রাখা দেখে আগ্রহ সহিত চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়তে লাগলাম,
' প্রিয় ভাইয়া
---আজ একটা কথা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে যে, আমি তোমার আপন ভাই নাকি রাস্তার কোনো ছেলে তা আমি জানি না।ছোট থেকেই তোমার কুলে পিটে বড় হয়েছি।ভেবেছি বাবা, মা না থাকলে কি হবে " আমার তো বাবা মার মতো ভালোবাসার একজন ভাইয়া আছে,এতেই অনেক। কিন্তু গতকাল যখন আমার কোনো কথা না শুনেই মারতে শুরু করলে তখন বুঝতে পারলাম। তুমি আমার আপন ভাই নাহ।আপন ভাই হলে কেউ কখনো তার আপন ছোট ভাইকে এতটা মারধর করতে পারে না।যাই হক ছোট থেকে যেহেতু আমার সব ভরনপোষণের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছো। সেদিক থেকে আমাকে মারতে মারতে মেরে ফেললেও কোনো আপত্তি ছিলো না। কিন্তু ভুল বুঝে আমাকে এতটা আঘাত করলে তা আমি মেনে নিতে পারছি না।---
--- ভাবি হইতো আমার নামে তোমাকে অনেক কিছু বলছে মনে হই। প্রকৃত পক্ষে ভাবিকে কখনো খারাপ কিংবা বাজে নজরে দেখেনি।ছোট থেকে মা বোনের ভালোবাসা কি তা আমি পাইনি।তাই রোদেলার ভাবির মাঝে মা, বোনের ভালোবাসাটা আমি খুঁজে পেতাম। ভাবিকে একটু বেশিই জ্বালাতাম। ভাবি আমার বিষয় গুলা কিভাবে নিতো তা আমি জানি না।তবে সেদিন তোমাদের রুমে আমার ফোন চার্জে লাগানো ছিলো। প্রাইভেট থেকে এসে তড়িঘড়ি করে তোমাদের প্রবেশ করে যে আপত্তিকর একটা অবস্থায় আমাকে পড়তে হবে তা জানতাম নাহ।বিশ্বাস করো ভাইয়া আমি সত্যিই জানতাম না যে, ভাবি দরজা লক করা ছাড়াই কাপড় বদলাচ্ছিলো। ---
--- যার দরুন ভাবি ও আমাকে ভুল বুঝে অনেক বকাঝকা করে।আর আমি তাকে বুঝানোর চেষ্টা করলে আমাকে ধমকিয়ে চুপ করে দেই। যাই হোক ভাইয়া তুমি আমাকে অনেক দয়া, করুনা করেছো। আর তোমার দয়া কিংবা করুনার পাত্র হতে চাই হতে না।চিরতরে জন্য এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছি। বেঁচে থাকলেও হইতো তোমাদের সঙ্গে আর দেখা হবে না।তোমাদের বয়সের তুলনায় আমি অতি তুচ্ছ একজন তারপরও দোয়া রইলো সুখে শান্তিতে থাকো।আর আমার মতো বেয়াদব টাকে ভুলে যাও। আল্লাহ হাফেজ। ---
.
.
চিঠিটা পড়া শেষে ধপ করে বিছানায় বসে পড়লাম।নিজের অজান্তেই চোখের জল গাল বেয়ে চিঠিতে পড়তে লাগলো। আজ কেন জানি বিশ্বাস হচ্ছে না।ছোট ভাইটা অভিমান করে বাড়ি ছেড়েছে।আমার রাগের জন্য যে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি তা আমি কখনো ভাবিনি।আনমনে ভেবে কান্না করছি আর চিঠির দিকে তাকিয়ে দেখছি।রোদেলা আমাকে অনেক জোরেই ডাকাডাকি করছে আমি শুনেও কেন জানি তার জবাব দিতে পারছি না।পরিশেষে রোদেলা রাকিবের রুমে আমাকে কান্না করা অবস্থায় দেখে বলে উঠে,
--- "তুমি হঠাৎ রাকিবের রুমে এসে কান্না করছো, হাতে আবার কিসের কাগজ? "
রোদেলার কথায় কোনো উত্তর না দিয়ে চিঠিটা ওর হাতে তুলে দিলাম।চিঠি হাতে পেয়ে ও আগ্রহ নিয়ে পড়তে লাগলো।পড়ার শেষে রোদেলাও কান্না করে বলে উঠে,
--- " এসব আমার জন্য হয়েছে তাই না। রাকিব আমাকে মা ভাবতো আর আমি ওকে ছি,, এখন নিজের প্রতি নিজের ঘৃণা হচ্ছে কেনো যে তোমাকে ওসব কথা বলতে গেলাম "
রোদেলার কান্না দেখে বললাম,
--- "এতে তোমার কোনো দোষ নেই।সব তো আমার রাগের কারনে হয়েছে"
--- "আচ্ছা রাকিব কি আর ফিরবে না? (রোদেলা)
--- "ফিরবে কিনা জানি না। তবে আমি আজ এখন থেকে ওকে খুঁজতে শুরু করবো। "
এই বলে মানিব্যাগটা হাতে নিয়ে প্রথম রাকিবের ক্লাসমেইট সজীবের কাছে গেলাম।ছোট ভাইটার সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব।তো সজীবের বাসায় গিয়ে সজীবকে জিজ্ঞেস করলে বলে,
--- " ওর সঙ্গে তো দুইদিন ধরে ভালোভাবে দেখাই হই না। তবে তানবীর সঙ্গে কলেজ মাঠে প্রতিদিনই ক্রিকেট খেলতে যায়। ভাইয়া আপনি বরং তানবীরের বাসায় যান "
সজীবের কথা মতো তানবীবের বাসায় চলে আসি।তারপর তানবীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি কিন্তু রাকিবের কোনো খুঁজ খবর দিতে পারলো না।এভাবে ছোট ভাইয়ের যত গুলো বেস্ট ফেন্ড ছিলো, সবাই কাছে গিয়েছি।কেউ কোনো খুঁজ খবর আমাকে দিতে পারলো নাহ। নিরাশ হয়ে রাতে বাড়িতে ফিরলাম " আমার ক্লান্তি ভরা চেহারা দেখে রোদেলা বলে,
--- " রাকিবের সন্ধান পেয়েছো_? "
বিছানা বসে আহত কণ্ঠে বললাম,
--- " নাহ পাইনি। রাকিবের সব ক্লাসমেটদের কাছে গিয়েছি। কিন্তু তারা আমাকে রাকিবের কোনো সন্ধান দিতে পারে নাই "
রোদেলা আমার কাঁধে হাত রেখে বলে,
--- "চিন্তা করো না। রাকিব কে আমরা পেয়ে যাবো। এখন খেতে আসো তো। সারাদিন তোমার উপর অনেক ধকল গেছে "
--- "খেতে ইচ্ছা করছে না "
--- "না খাইয়ে থাকলে কি ছোট ভাইটা আসবে_?আসবে না "
--- "নিশ্চুপ "
--- "না খেয়ে নিজেকে কষ্ট দিবার কোনো মানেই হয় নেই।তোমাদের চিন্তা ভাবনায় আমিও খাইনি"
রোদেলার কথা শুনে ইচ্ছা না থাকার পরেও খাবার খেয়ে নিয়েলাম।খাবারের পর্ব শেষে রাকিবের রুমে যায়। দেয়ালে ছোট ভাই টার হাসি উজ্জ্বল ছবিটা দেখে বুকের পাশটা যেন দুমড়েমুচড়ে উঠলো। চোখ থেকে অঝোর ধারায় জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো। আনমনে ভেবে নিলাম, " এই হাত দিয়ে আমি আমার ছোট ভাইটাকে পশুর মতো আঘাত করেছি, এ হাত আর রাখবো না। রেগে গিয়ে দেয়ালে অবিরাম হাতটা আঘাত করতে লাগলাম।রোদেলা ওপাশ থেকে শব্দ পেয়ে রুমে এসে আমাকে থামিয়ে বলে,
--- " একি করছো হাত থেকে তো অনেক রক্ত ঝড়ছে। প্লিজ থামো " (রোদেলা কান্না করে)
---- " রোদেলা আমি এ হাত দিয়ে ছোট ভাইটাকে পশুর মতো আঘাত করেছি।আমি এই হাত আর রাখবো না "
এ বলে আবারও দেয়ালে আঘাত করতে লাগলাম। রোদেলা আমাকে পিছন দিকে জড়িয়ে ধরে এখান থেকে সরিয়ে নেই। তারপর নিজেকে শান্ত করতে বাধ্য করলাম। রোদেলা আমার হাতের অবস্থা দেখে কান্না করছে আর রক্তাক্ত হাতে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিচ্ছে। আনমনে ভেবে যাচ্ছি " আমার এত রাগ হই কেনো। এই রাগের জন্য ছোট ভাই দূরে সরে গেলো। মন খারাপ নিয়ে বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিলাম। রোদেলা পাশে থাকলেও নিশ্চুপ হয়ে আছে কিছু বলছে না। রাতের ঘুমটা নির্ঘুমেই কেটে গেলো। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিয়ে স্ক্রিনে লক্ষ্য করলাম তানবীরের নাম্বার থেকে ১০ বার মিস কল উঠে আছে। তড়িঘড়ি করে তানবীরের নাম্বারে কল দিলাম কয়েকবার রিং হবার পর তানবীর ওপাশ থেকে কল রিসিভ করে বলে উঠে,
-- "ভাইয়া একটা দুঃসংবাদ আছে "
-- "সাতসকালে আবার কি দুঃসংবাদ?"
-- "ভাইয়া রাকিব যে বাসে ঢাকায় যাচ্ছিলো সে বাসটি এক্সিডেন্ট হয়েছে।শুনলাম বাসের মধ্যে যত গুলো যাত্রী ছিলো সবই নাকি অনেক খারাপ অবস্থায় আছে।ভাইয়া আমার তো রাকিবকে নিয়ে অনেক ভয় হচ্ছে"
তানবীরের এ কথা শুনার পর আমার দুনিয়া ধারী নিমিষেই যেন উলোটপালোট হয়ে গেলো। সাতসকালে এরকম একটা নিউজ শুনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। কাঁপা কাঁপা গলায় তানবীরকে বললাম,
-- "বাসটি কোথায় এক্সিডেন্ট হয়েছে বলতে পারো_?"
-- "ভাইয়া বাসটি বেশি দূরে যেতে পারে নাই আমাদের শেরপুর ও দিকেই সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েছে।আপনি বরং বাসস্ট্যান্ডে আসুন আমিও ওখানে দাঁড়িয়ে আছি গাড়ি পেলে রাকিবের ওখানে যাবো।আর আপনি আসলে একসঙ্গে যাওয়া যাবে"
-- "ওকে যাচ্ছি আমি"
রুমে এসে তড়িঘড়ি করে শার্ট গায়ে দিয়ে। মানিব্যাগ পকেটে রেখে দিলাম।রোদেলা আমার তড়িঘড়ি দেখে জানার আগ্রহ নিয়ে বলে উঠে,
-- "তড়িঘড়ি করে কোথায় বের হচ্ছো_?
-- "রোদেলা অনেক বড় অঘটন ঘটে গেছে_!!
-- "অঘটন ঘটেছে মানে_?
-- "রাকিব যে বাসে ঢাকায় যাচ্ছিলো সে বাসটি শেরপুর ও অতিক্রম করতে পারেনি সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েছে। রাকিবের বন্ধু আমাকে ফোন দিয়ে এইমাত্র জানালো, এখন ওখানেই যাচ্ছি"
-- "আমিও যাবো তোমার সঙ্গে_?
-- "আচ্ছা ঠিক আছে জলদি বের হও সময় নেই"
রোদেলা চট করে বোরকা পড়ে আসলো।আমি রোদেলা এবং তানবীর, ছোট ভাই টার বন্ধুকে নিয়ে শেরপুর চলে যায়।লোকজনকে জিজ্ঞেস করলে তারা নানান রকম কথা বলে "যে বাসের মধ্যে যে সকল যাত্রী ছিলো অধিকাংশই বেঁচে নেই।হাতে গুনা কয়েকজন মনে হয় হইত বেঁচে আছে"
লোকজনের এরকম কথাবার্তা শুনে আমার তো চোখের জল অঝোর ধারায় পড়ছে।আমার সঙ্গে রোদেলা ও কান্না করছে।উপর দিকে তানবীর শুধু আমাদের দুইজনকে শান্তনা দিয়ে যাচ্ছে। আমার জীবনে আজ এ নিয়ে দুইবার কষ্টের কান্না কেঁদেছি।
--- বাবা মা যখন আমাকে এতিম বানিয়ে চলে গেলো তখন একবার কেঁদেছি।আর আজ ছোট ভাইটার জন্য কান্না করছি। যদি ভাই টার কিছু হয়ে যায় তো নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবো না।সারাজীবন নিজেকে দোষী ভেবে যাবো। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমি একেবারে এতিম হয়ে যাবো। ছোট ভাই ছাড়া আপন বলতে কেউ আর নেই। আল্লাহর কাছে হাজার বার বলছি আমার ভাইটা যেনো কোনোভাবে বেঁচে যায়।আনমনে এসব ভাবতে ভাবতে শেরপুর চলে আসি। যেখানে বাসটি এক্সিডেন্ট হয়েছে, সেখানে প্রথম যায়।গিয়ে দেখি শুধুমাত্র বাস ভাঙাচুরা অবস্থায় পড়ে আছে।আর লোকজন বলাবলি করছে,
' যাত্রীর আত্নীয়স্বজন যারা আসছেন তারা ওমুক সরকারি হাস্পাতালে চলে যান। আপনাদের আত্নীয়স্বজনদের ওখানে চিকিৎসা চলছে। লোকজনের কথামতো হাসপাতালে চলে যায়।
হাসপাতালে এসে কান্না যেন কোনো বাধায় মানছে না। আমার মতো এখানে অনেকজনেই এসে তাদের রিলেটিভদের জন্য কান্নাকাটি করছে।
যখন আমার সামনে দুই তিন টা লা'শ এম্বুলেন্সে নিয়ে গেলো তখন ছোট ভাই টার কথা ভেবে বুক ফেটে যেন কান্না চলে আসছে। পাগলের মতো ছোট ভাইকে খুঁজতে লাগলাম। হাসপাতালে অনেক রোগীর ভিড়ে আমার ভাইকে খুঁজেই যেন পাচ্ছিলাম না। সিড়ি বেয়ে উপরে তলায় উঠে, প্রথম কক্ষেই ছোট ভাইকে অজ্ঞান অবস্থা দেখা মিলে গেলো। হাতে পায়ে রক্ত ঝড়ছে কোনো ডাক্তার যেন সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই অবহেলায় ফেলে রেখেছে। নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে ডাক্তারকে রাগান্বিত হয়ে বলে উঠলাম,
--"ডাক্তার আমার ভাইটার যে র'ক্ত ঝড়ছে তার চিকিৎসা না করে অবহেলায় ফেলে রেখেছেন কেনো"
--"দেখুন আমরা এখানে অনেক চাপের ভিতরে আছি কাকে ছেড়ে কাকে ট্রিটমেন্ট করবো বলেন তো। পারলে আপনার ভাইটাকে অন্য কোনো হসপিটালে নিয়ে যান। এখানে রোগীদের তুলনায় ডাক্তার খুব অল্পসংখ্যক। সব রোগীদের ভালো ট্রিটমেন্ট আমরা করতে পারছি না। "
ডাক্তারের কথা শুনে কোনো দেরি করলাম না।রাকিবকে নিয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে এডমিট করিয়ে নেই। সেখানে চুল পরিমান ও পেসেন্টদের প্রতি তারা অবহেলা করে না। পারলে তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চিকিৎসা করে থাকে।ডাক্তার বললো,
--- " আপনার ভাইয়ের ডান পা ভেঙেছে এবং দুই হাতে বেশ আঘাত পেয়েছে। চিন্তা করবেন না খুব দ্রুতই আপনার ভাই ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ "
ডাক্তার কথা শুনে নিজের মাথায় হাত রেখে ধপ করে বেঞ্চ বসে পড়লাম। আমার কাঁধে হঠাৎ কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে মাথা উপরে তুলে তাকাতেই রোদেলা ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,
--"প্লিজ এভাবে ভেঙে পড়ো না। রাকিব ভালো হয়ে যাবে আল্লাহর উপর ভরশা রাখো।" (রোদেলা)
-- "ভাইয়া রাকিব নিশ্চয়ই ভালো হবে আপনি চিন্তা কইরেন না" (তানবীর)
সারাদিন ভাইটার জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে রোদেলা আর তানবীরের কথা যেন ভুলেই গেছিলাম। যে আমার সঙ্গে ঘুরাঘুরি করে তারাও অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। সারাদিন না খেয়ে তাদের দুইজনের মুখ যেন শুকিয়ে আছে। তাদের এ অবস্থা দেখে নিজের কাছেই অনেক খারাপ লাগলো। তড়িঘড়ি করে হোটেল থেকে খাবার এনে তানবীর আর রোদেলার হাতে তুলে দেই। রোদেলা আমাকে ছাড়া খেতে ইচ্ছুক না। ইচ্ছা না থাকার পরেও রোদেলা আমাকে জোর করে খাবার মুখে তুলে দিলো। চোখের জল মুছে অল্প কিছু খাবার খেয়ে আর খেতে পারলাম না। খাবার পর্ব শেষ করে নিলাম। তানবীরের উদ্দেশ্য বললাম,
--"তানবীর কাল তোমাকে এত করে বললাম রাকিব কোথায় আছে তার সন্ধান কি জানো। সব জেনেও আমাকে তখন মিথ্যা বলছো কেনো_? "
--"সরি ভাইয়া। রাকিব আমাকে নিষেধ করেছিলো। এরজন্য সবটা জেনেও মিথ্যা বলছি (তানবীর)
--"থাক না এসব কথা। যা হবার তা তো হয়েছেই (রোদেলা)
রোদেলার কথা শুনে নিশ্চুপ হয়ে গেলাম। ওদেরকে এসব দোষ দিয়ে কি হবে। সব তো আমার রাগের কারণেই হয়েছে। ছোট ভাইয়ের উপর যদি রাগ না দেখাতাম তাহলে এত কিছু আর হতো না। সারাদিন এভাবেই কেটে গেলো সন্ধ্যার সময় রাকিবের জ্ঞান ফিরলো। চোখে মেলে আমাদেরকে দেখে বলে উঠলো....
চলবে...


0 Comments