জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের সাথে যৌন নিরাপত্তার কয়েকটা প্যাকেট তাও আবার নিজের ছোট বোনের ব্যাগে দেখে চমকে গেলাম!




রিত্তের এতটা অধঃপতন দেখে লজ্জা লাগছে। কিছু না ভেবেই রিত্তকে ডাক দিলাম। রিত্ত আমার সামনে আসতেই গালে চড় বসিয়ে দিলাম। রিত্তকে চড় দেওয়া দেখে মা- আর বাবা দৌড়ে এল। পাঁচটা আঙুলের ছাপ রিত্তের গালে বসে গেছে।

- বাবা অনেকটা রাগি রাগি ভাব নিয়েই বলল' কি হয়েছে তুই রিত্তকে মারলি কেন?'

- মারবো না কি করব? তোমার মেয়ে ব্যানেটি ব্যাগে কি রেখেছে জানো?

- কি রেখেছে?

- জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল, এ ছাড়া আরো দেখ কিসের প্যাকেট এসব। বাবা এসব দেখে আর কিছু বলতে পারছে না। বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে।

মা এসব দেখে রিত্তকে চড় মেরে বলল ' তুই আমার মেয়ে হতে পারিস না। তুই এতটা খারাপ আগে জানতাম না।

মা আমি কি খারাপ করছি? আমি নিজের নিরাপত্তার জন্য এসব ব্যাগে রেখেছি। জানো মা, আমি একজনকে ভালোবাসি। সে যদি আমার ভালোবাসা প্রমাণের জন্য দেহ চায় তাহলে আমাকে তো দিতে হবে। কারণ তাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। আর এতে তোমাদের সম্মান যাবেও না। কারণ আমি শতভাগ নিরাপদ থাকবো ।

- রিত্ত কি বলছিস? তুই কি পাগল হলি? আর কোন কুত্তার বাচ্চা তোকে ভালোবাসে? আর ভালোবাসলে যারা এসব চাই তারা মন থেকে ভালোবাসে না।

কিন্তু ভাইয়া আমি রাশেদকে ভালোবাসি। তাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। রাশেদ বলেছে, সে আমার সাথে রুম ডেট করবে, তাই প্রটেকশন সাথে রেখেছি।

- বাবা রিত্তের গালে ঠাস ঠাস করে চড় বসিয়ে দিয়ে বলল' তুই আমার মেয়ে না। তুই আমার মেয়ে হলে এমন খারাপ কাজ করতে পারতি না।

- কি হলো বাবা মাত্র তিনটা থাপ্পর? আর দিবে না? দাও না আরো থাপ্পর। জানো বাবা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আমি চাই না আমার জন্য তুমি রাশেদের বাবার পায়ে পড়। আর আমি তাই প্রটেকশন সাথে নিয়ে রেখেছি । আর তুমি না বললে আমি তোমার মেয়ে না। হুম ভালো বলেছে। আচ্ছা বাবাই, আমি যদি শুধু জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যাগে রাখি তাতে তোমার লজ্জা লাগে। আর অন্যদিকে তোমার গুণধর ছেলে একটা মেয়েকে দিনের পর দিন ভালোবাসার নাম করে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোগ করেছে। মেয়েটি এখন প্রেগনেন্ট! মৌ এর বাবা তো তোমার পায়েও ধরেছিল তার মেয়েকে যেন তোমার গুণধর ছেলে বিয়ে করে তোমার বাড়িতে চাকরানী করে রেখে দেয়। কিন্তু তোমরা কি করেছো? তুমি ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছ। আর মা বলেছে, পতিতার মেয়েরা মৌ এর মতো পতিতা হয়। আর ভাইয়া তুই নাকি মৌ এর সাথে কথাই বলিসনি। সে বাচ্চাটা নাকি তোর না সে বাচ্চাটা নাকি তোর না অন্যের বাচ্চা তোর কাছে গছাতে চেয়েছিল।

- কি হলো বাবা মাথা নিচু করে আছো কেন? আচ্ছা মা আমি মেয়ে হয়ে তোমাকে কিভাবে পতিতা বানাতে পারি। তাই আমি ব্যাগে এসব রাখি । আর হ্যাঁ তোমার গুণধর ছেলেকেও বলো পাঁচ টাকা দামের একটা প্যাকেট পকেটে রাখতে। তাতে করে, আর কোন বাবাকে তোমার পায়ে পড়তে হবে না। হবে না আর কোন মা পতিতা। জানো বাবা আমি মৌ এর সবটা জানতাম। ভাইয়া মৌ এর সাথে যা যা করেছে বিয়ের কথা বলে তা যদি আমার সাথে হতো?

- বাবা তোমার পায়ে পড়ি, তুমি মৌকে মেনে নাও। আর ভাইয়া তোর কাছে কোন আবদার করিনি কোনদিন। কিন্তু আজ তোকে বলছি, তুই মৌকে বিয়ে করে নে। মৌ তোকে অনেক ভালোবাসে। জীবনে সুখী হতে বিশস্ত হাতের পাশাপাশি ভালোবাসাটাও লাগে। তুই সত্যি অনেক সুখী হবি। আমার বান্ধুবিটা অনেক ভালো, অনেক।

- আর বাবা আমি তোমাদের বুঝানোর জন্যই ইচ্ছা করে, ব্যাগে এসব রেখেছিলাম। ক্ষমা করে দিয়ো। আমার কোন রিলেশন নেই। শুধু তোমাদের ভুলটা ধরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম।

.

বাবা রিত্তকে জড়িয়ে ধরে বলল' মা'রে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলছি। কালই মৌ মামুনিকে বিয়ে করিয়ে আনবো। এবার খুশি তো।

কিন্তু বাবা মৌ আজ হসপিটালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। মৌ গতরাতে সুসাইড করার জন্য হাতের শিরা কেটে ফেলেছে!

- রিত্তের কথা শুনে বুকের ভেতরটা কেমন যেন মুচড় দিয়ে উঠলো। আর একমূহুর্ত দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। চলে গেলাম হসপিটালে। হসপিটালে গিয়ে দেখি মৌ এর বাবা চেয়ারে বসে আছে। চোখের পানি নিরবে ঝরছে। নিজেকে আজ বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে। মৌ এর রুম থেকে ডাক্তার বের হতেই দৌড়ে গিয়ে বললাম' স্যার মৌ এর কি অবস্থা? '

অনেক রক্তক্ষরন হয়েছে। অবস্থা বেশি ভালো না। আল্লাহ যদি রহম করে।

আচ্ছা ডাক্তার আমি মৌ এর সাথে দেখা করতে পারি?

- হুম বাট কোন কথা বলবেন না।

- আচ্ছা।

আমি মৌ এর পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠলো। মৌ এর মায়াবী চেহারাটা কেমন যেন হয়ে গেছে। হাতটা ব্যান্ডেজ করা।।

চলবে?


নতুন পাঠ'কেরা পর'বর্তী পর্ব'গুলা মিস না করতে চাইলে সা'থেই থাকুন ❤️