বাংলাদেশের পর্যটন এলাকা

 "এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,

 ও সে সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি।"

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা অনুপমভাবে ফুটে উঠেছে কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের কবিতায়। বাংলাদেশের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত অনেক স্থান থাকার পরও পর্যটনশিল্প তেমন বিকশিত হয়নি। ব-দ্বীপ সদৃশ এ বঙ্গভূমির রয়েছে বিচিত্র ভূ-ভাগ, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, অনুপম সমুদ্র বেলাভূমি কুয়াকাটা, পাথর জলের মিতালিতে বয়ে যাওয়া জাফলংবিছানাকান্দির নয়নাভিরাম সৌন্দর্য, রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, হাকালুকি হাওড়, মাধবকুণ্ডশুভলং ঝরনা, সেন্ট মার্টিন প্রবাল দ্বীপ এবং বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা সুন্দরবন। এ দেশের প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্রত্র্য পৃথিবীর অন্য দেশ থেকে অনন্য ও একক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। পর্যটন বিকাশে বাংলাদেশের রয়েছে অপার সম্ভাবনা।

পর্যটনশিল্প পৃথিবীর একক বৃহত্তম শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। পর্যটনের গুরুত্ব সর্বজনীন। ১৯৫০ সালে পৃথিবীতে পর্যটকের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৫ মিলিয়ন যা বর্তমানে ১,২৯০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। পর্যটনের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হয়। প্রতি বছর ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী 'বিশ্ব পর্যটন দিবস' পালিত হয়ে আসছে। জাতিসংঘের অধীনস্ত বিশ্ব পর্যটন সংস্থার (ইউএনডব্লিউটিও) প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ১৯৮০ সাল থেকে দিবসটি পালনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও পর্যটন কেন্দ্রের সাথে সেতুবন্ধন গড়ে তোলা।

পর্যটনশিল্প কী: জাতীয় পর্যটন নীতিমালা-২০১০-এর শুরুতেই পর্যটনকে বহুমাত্রিক শিল্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

পর্যটন বলতে বিনোদন, অবসর সময়ে অথবা ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থান কিংবা এক দেশ হতে অন্য দেশে ভ্রমণ করাকে বোঝায়। আবার যিনি আমোদ-প্রমোদ, অবকাশ যাপন বা বিনোদনের উদ্দেশ্যে অন্যত্র ভ্রমণ করেন তিনি হলেন পর্যটক। বিখ্যাত কয়েকজন পর্যটক হলেন- ইবনে বতুতা, কলম্বাস, ফা-হিয়েন, মাঝে পোলো। পর্যটনকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা: ক. আন্তর্জাতিক পর্যটন ও খ. দেশীয় পর্যটন

পার্থিব সৌন্দর্য উপভোগ করার উদ্দেশ্য মানুষের দর্শনীয় স্থানে অবস্থান এবং এর সাথে সম্পর্কযুক্ত কর্মকাণ্ডকে পর্যটন বলে। আর এই পর্যটনকে কেন্দ্র করে যখন অর্থনীতি আলাদা একটি গতি পায় তখন তাকে বলে পর্যটন শিল্প।

পর্যটনশিল্প বলতে বোঝায় বিভিন্ন ব্যবসার একটি সমন্বিত নান্দনিক রূপ যা সরাসরি গ্রাহকদেরকে বিভিন্ন পণ্যদ্রব্য ও সেবাসামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে, বাড়ির বাইরে ভ্রমণে যাওয়া মানুষদেরকে আনন্দ দান করে এবং পর্যটকদের অবকাশকালীন কর্মকাণ্ড সম্পাদনে বিভিন্ন সহায়তা ও সেবা প্রদানের মাধ্যমে বাণিজ্য করে থাকে।

বাংলাদেশে পর্যটনশিল্পের অপার সম্ভাবনা: অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, বিরল প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি আমাদের দেশকে রূপের রাণী হিসেবে পরিণত করেছে। যা কার্যকর ব্র্যান্ডিং ও প্রচারের মাধ্যমে আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পরিচিত হতে পারে বিশ্ব দরবারে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশে পর্যটন শিল্প বিকাশের রয়েছে উজ্জ্বল সম্ভাবনা। দেশের অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান ১০ শতাংশে উন্নীত করতে ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম ৮০। কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ এবং শুরু কক্সবাজারে তিনটি পর্যটন পার্ক নির্মাণ প্রকল্প-সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক, সাবরং ট্যুরিজম পার্ক এবং নাফ ট্যুরিজম পার্ক। এছাড়া সরকার আরও বিভিন্ন প্রকল্প পর্যটন শিল্প বিকাশে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।


বিশ্বব্যাপী পর্যটনকে বলা হয় 'Invisible Export Goods' বা অদৃশ্য রপ্তানি পণ্য। অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের চেয়ে পর্যটনের সুবিধা হলো, অন্যান্য পণ্য রপ্তানির একটা সীমা আছে, সুতরাং রপ্তানি আয়ও সীমিত। কিন্তু পর্যটন এমন একটি শিল্প যেখানে বিনিয়োগ, চাকরি ও আয়ের কোনো সীমা নেই। বিশেষত বাংলাদেশে যেখানে অসংখ্য সমস্যা, বেকারত্ব, প্রতিকূল বৈদেশিক বাণিজ্য, প্রধান প্রধান অর্থনৈতিক খাতগুলোর শ্লথগতি এবং পুঁজি, প্রযুক্তি ও সম্পদের অপ্রতুলতা রয়েছে, সেখানে নৈসর্গিক প্রকৃতি ও ঐতিহ্যকে কাজে লাগিয়ে স্বল্প পুঁজিতে পর্যটনশিল্পের উন্নয়ন করতে পারলে তা ব্যাপক কর্মসংস্থানবৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বিরাট উৎস হতে পারে।

বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের প্রতিবন্ধকতা বহুমুখী সমস্যার আবর্তে বাংলাদেশে পর্যটনশিল্প সংকটাপন্ন। অপার প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত এ দেশে পর্যটনশিল্পের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়াবার এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির কোনো সুনির্দিষ্ট ও সমন্বিত পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত না হওয়ায় পর্যটনশিল্পের আশানুরূপ বিকাশ ঘটছে না। ১৯৯২ সালে ঘোষিত পর্যটন সম্পর্কিত জাতীয় নীতিমালারও সুচারু বাস্তবায়ন হচ্ছে না। 

বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো নিম্নরূপ:

যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত সমস্যা: আমাদের দেশের আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় স্থানগুলো বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অবস্থান করছে। এ সকল স্থানে যাতায়াতের জন্য নৌ ও সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া ভ্রমণের জন্য দ্রুত ও নিরাপদ যানবাহনের ব্যবস্থা, আরামদায়ক ও নিরাপদ হোটেল, মোটেল ও বাসস্থানের ব্যবস্থা এবং কাঙ্ক্ষিত বিনোদনের অভাব রয়েছে।

ii. বেসরকারি উদ্যোগের অভাব: পর্যটন বেসরকারি উদ্যোগেই সব দেশে সমৃদ্ধ হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো পর্যন্ত এমন কোনো পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি যাতে পর্যটন খাতে বেসরকারি উদ্যোক্তারা ব্যাপক পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারেন। তাছাড়া বেসরকারি খাতে পর্যটন এখনো শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। পর্যটন খাতে বেসরকারি উদ্যোগকে উদ্বুদ্ধ

করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মতৎপরতারও অভাব রয়েছে।

iii. সরকারি উদ্যোগের অভাব: যে কোনো দেশের সরকারি পর্যটন

- দন্তরেই স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রমোশন বিভাগ থাকে। তারা দেশে ও বিদেশে যথাক্রমে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের উৎসাহিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে। দেশের বাইরে দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে এ কাজ পরিচালিত হয়। অথচ আমাদের অনেক বিদেশি দূতাবাসে পর্যটন বিষয়ক কোনো ডেস্ক পর্যন্ত নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।।

iv. অনুন্নত অভ্যন্তরীণ পর্যটন ব্যবস্থা: অভ্যন্তরীণ পর্যটন উন্নত না হলে কোনো দেশে আন্তর্জাতিক পর্যটন বিকাশ লাভ করতে পারে না। আর অভ্যন্তরীণ পর্যটন উন্নত হয় কেবল দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে পর্যটনে উৎসাহিত করার মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের দেশে এ ক্ষেত্রে। গৃহীত উদ্যোগ পর্যাপ্ত নয়।

v. নিরুপদ্রব পরিবেশ এবং নিরাপত্তার অভাব: আমাদের দেশে পর্যটনের ক্ষেত্রে নিরুপদ্রব পরিবেশ এবং নিরাপত্তার অভাব পরিলক্ষিত হয়। পত্রিকায় প্রায়ই দেখা যায়, বিমানবন্দরে বিদেশিরা নানাভাবে প্রতারিত কিংবা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বিমানবন্দর পেরিয়ে ট্যাক্সি বা মোটর ভাড়া করতে গিয়েও তারা প্রতারকের খপ্পরে পড়ে। এ সকল কারণে পর্যটকদের মনে বাংলাদেশের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব গড়ে ওঠে। 


vi. আকর্ষণীয় প্রচার ও সাবলীল উপস্থাপনার অভাব: বাংলাদেশের নয়নাভিরাম অফুরন্ত প্রাকৃতিক শোভা এবং ঐতিহাসিক স্থাপত্যকীর্তি থাকলেও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে সেগুলো আকর্ষণীয় করে প্রচার এবং উপস্থাপন করার পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেই। এর ফলে পর্যটনশিল্প দ্রুতগতিতে বিকশিত হচ্ছে না।

vii. দক্ষ গাইডের অভাব ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসা বিদেশিদের অনেক সমস্যার মধ্যে একটি হলো ভালো গাইডের দুষ্প্রাপ্যতা। ভিন দেশে এসে একজন পর্যটক প্রথমেই পেতে চায় একজন ভালো গাইড, যিনি তার ভ্রমণকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবেন। কিন্তু আমাদের দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভালো ও উপযুক্ত গাইডের অপ্রতুলতা রয়েছে।

viii. পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাব দেশে পর্যটনশিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য দক্ষ ও মানসম্মত জনশক্তি অপরিহার্য। আর আধুনিক পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই কেবল এ ধরনের জনশক্তি গড়ে তোলা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে পর্যটনসংক্রান্ত প্রশিক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা একেবারেই অপর্যাপ্ত।

ix. রাজনৈতিক অস্থিরতা হরতাল, ধর্মঘট তথা রাজনৈতিক অস্থিরতা এ দেশের অন্যান্য খাতের মতো পর্যটনশিল্পের বিকাশের ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশে যখন-তখন হরতাল-ধর্মঘট এবং. রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু হওয়ায় বাড়তি ঝক্কির সম্মুখীন হয় পর্যটকরা। ফলে ভাটা পড়ে পর্যটকদের উৎসাহে, অবদমিত হয় বিদেশীদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ইচ্ছা। আর এভাবেই রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ পর্যটনশিল্প থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।

x. পর্যটন নীতির দৈন্যদশা: বাংলাদেশে পর্যটনশিল্পের ক্ষেত্রে সরকারি নীতির দৈন্যদশা পরিলক্ষিত হয়। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসমূহে এ খাতে বরাদ্দ অপ্রতুল। পর্যটন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন সরকারি বিভাগ যেমন- রাস্তাঘাট, যানবাহন, প্রত্নতত্ত্ব, সংস্কৃতি, ক্রীড়া প্রভৃতির মধ্যে সমন্বিত কর্মকান্ডের নীতি অনুসৃত হয় না। পর্যটনশিল্পের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নীতিগত দুর্বলতা রয়েছে। পর্যটনশিল্পের বিকাশের জন্য যে বিশেষজ্ঞ জ্ঞান, দক্ষতা, উদ্ভাবন ও অর্থ বিনিয়োগ অপরিহার্য তা জাতীয় উন্নয়ন নীতিমালায় খুব একটা প্রাধান্য পায়নি।

পর্যটনশিল্পের উন্নয়নের জন্য করণীয়: বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের সংকটের উত্তরণ এবং বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হঠাৎ করে সম্ভব না হলেও এজন্য এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। নিচে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য কতিপয় সুপারিশ পেশ করা হলো: অবিলম্বে পর্যটন সম্পর্কিত জাতীয় নীতিমালা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

দেশের আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানগুলোকে সুপরিকল্পিতভাবে আধুনিকায়ন করে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে তা তুলে ধরার ব্যবস্থা করতে হবে। ঐতিহাসিক নিদর্শন ও দর্শনীয় স্থানসমূহে যাতায়াতের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, আরামদায়ক বাসস্থান ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে।

অভ্যন্তরীণ পর্যটন ব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে পর্যটন সম্পর্কে সচেতন ও আগ্রহী করে তোলা অত্যন্ত প্রয়োজন। এজন্য পর্যটন বিষয়ে ব্যাপক গণশিক্ষা এবং স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পর্যটন বিষয়ে শিক্ষা দিতে হবে।

দেশের শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠীকে পর্যটন বিষয়ে আধুনিক ও মানসম্মত প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পর্যটন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করতে হবে।

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য দেশে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলার প্রয়োজন। বিমানবন্দরে নানা উটকো ঝামেলা, ভিক্ষুকদের উৎপাত, ছিনতাই ইত্যাদি যাতে বিদেশি পর্যটকদের বিব্রত না করে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।


প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ পর্যটক গাইড গড়ে তুলতে হবে এবং দক্ষ গাইডের দুষ্প্রাপ্যতা দূর করতে হবে। বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্র ও আকর্ষণীয় স্থানগুলোর ওপর ফিল্ম ও

ডকুমেন্টারি তৈরি করে বিদেশে বাংলাদেশের মিশনসমূহের মাধ্যমে তা বহির্বিশ্বে ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। পর্যটন স্পটগুলোতে নিয়মিতভাবে আকর্ষণীয় খেলাধুলা, হস্তশিল্প প্রদর্শনী,

মাছধরা, নৌকা ভ্রমণ, লোকসঙ্গীত ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি, দেশের আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়ন করতে হবে।

বাংলাদেশে পর্যটন আকর্ষণের অভাব নেই। একজন পর্যটক যা চায় তার সবই আছে এ দেশে। কিন্তু অভাব আছে কার্যকর উদ্যোগের, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার এবং আন্তরিক প্রচেষ্টার। বর্তমানে আমাদের দেশে দেশি- বিদেশি পর্যটকদের জন্য সীমিত পর্যটন সুবিধা আছে। কেননা সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রে এ শিল্পে বিনিয়োগ চাহিদার তুলনায় সামান্য। ফলে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে পর্যটনশিল্পে বাংলাদেশের সাফল্য খুবই কম। কিন্তু পর্যটনশিল্পে বাংলাদেশের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। পর্যটনশিল্পে বিদ্যমান সমস্যাসমূহ সমাধান করতে পারলে এবং উপযুক্ত পর্যটন পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস হতে পারে।


Post a Comment

0 Comments