এই যে চিনিতে পারছেন না? আচ্ছা সহজ করে দিচ্ছি। নয়ণ কে চিনেন না। আরে আপনার ছাত্র যে ছেলেটা এস.এস.সি ফেল করছিল আপনি পড়ানোর পর যে এ+ পেল। চিনতে পারছেন না আরে আমি তিথলি। আরে আপনার এই অবস্থা কেন। কি হইছে আপনার? কোথাও ব্যাথা পাইছেন? দেখি দেখি....!
ব্যাথা ব্যাথা বুকের ভিতরে। আমি বিশ খাবো!!! মদ খাবো!!!!সব খাবো ও আমাকে ছেড়ে গেছে, ছেড়ে গেছে হুহুহুহু...হুহুহুহু।
আরে আরে কাদঁচ্ছেন কেন। কাঁদবেন না। আসুন আপনার কথাই শুনবো আজকে। এই আসুন আসুন, আরে আসুন তো..
গায়ের এতো গন্ধ কেন। আপনি কি নেশা করতেছেন। আপনার মত আপন স্যারের এই অবস্থা।
জানেন, আমি এখন সিগারেট খাই।
---আগে তো খেতেন না।
---আমার চৌদ্দ গোষ্ঠী কেউ খায় না।
---আর কি খান?
---মদ খাই। প্রতি দিন।
---আর কিছু করেন, কই কই দেখি ইন্জেকশন যে নেয়, আপনি নেন নি। গাঁজা খান না গাঁজা।
---না ধক বেশি কাঁশি বের হয়।
---কাঁশি বের হয় না...। কে করেছে এই অবস্থা? তাহলে শুনুন
---আমি না একটা মেয়েকে ভালোবাসি......
তার নাম অয়ন্তিকা। তার বাসায় বক্সএ চিটি দেই।
অয়ন্তিকাঃ- এটা কি? কি এটা????
আমিঃ- খাম।
অয়ন্তিকাঃ- এর ভিতরে কি?
আমি:- চিটি।
---কি লেখা আছে?
---প্রেম পত্র!!!
---আমি old মডেল পছন্দ করি না। প্রোপোজ কর। এখন হাটুগেরে প্রোপোজ কর।
আমি হাটু গেরে ভয়ে ভয়ে তাকে প্রোপোজড করলাম। তার খুব রাগ। আমি খুব ভয় পেতাম।
অয়ন্তিকা বলল তোমার কোন কিছুই আমার পছন্দ না আমার। গলায় এটা কি? এসব চলবে না। কি ড্রেস এটা ছি... সব চেন্জ করতে হবে। আমার কথা সব শুনতে হবে।
---হুম। দাড়ি কাটবো।
---না। শুধু দাড়িটাই আমার পছন্দ।
.......তারপর এক দিন......
নাও সিগারেট খাও।
---আমার চৌদ্দ গোষ্ঠি কেউ সিগারেট খায় না।
---তুমি খাবে।
---হুম।
এইভাবে আমাদের প্রেম চলতে থাকে। প্রায় ৬মাস পরে। পার্কে ও আমাকে একটা চিটি দিল।
আমি:- কার বিয়ে, আমরা দুজন বিয়ে খেতে যাবো।
খুলে দেখ।
খুলে দেখি অয়ন্তিকার বিয়ের কার্ড। সে আমাকে বলল কি আছে তোমার, কয়েকটা টিউশনি আর কি? আর ১০টা বয়ফ্রেন্ডের মত তুমিও। আর কখনো ফোন দিবে না আমাকে। আর যদি ফোন দিছ তাহলে খবর খারাব আছে আর কাউকে বলবেনা না যে তুই আমার বয়ফ্রেন্ড ছিলে। আর হ্যা আমাকে হেল্প করার জন্য ধন্যবাদ। আমার বিয়েতে আসতে বলিনি। আর কখনো যেন না দেখি।
তিথলি :- মেয়ে টা এখন কি করে?
---সুখে আছে খুব সুখে আছে। স্বামীর সাথে খুব সুখে আছে।
---হম। মেয়েটা সুখে আছে, আপনি কি করছেন। নিজেকে শেষ করে দিচ্ছেন। যে আপন স্যারের কাছে স্টুডেন্ট পড়ার জন্য উটে পড়ে থাকতো, সেই আপন স্যার কিনা স্টুডেন্ট পায় না। যে একজন বিলিয়্যান্ট মানুষ, সে মাস্টার্স এর মত পরিক্ষায় ফেল করে। আপনার বাবা-মা জানে এই অবস্থার কথা?
---না।
---আপনার বাবা-মা জানলে কি ভালো থাকবেন তারা। আরে নিজের বাবা-মায়ের কথা ভাবুন। কাল থেকে আপনার নতুন রুটিন শুরু। আপনি তো অনেক মানুষকে ভালো করে বাঁচতে শিখিয়েছেন। দেখি, আমি আপনাকে ভালো করতে পারি কি না। এইযে, উঠুন চলেন।
বাসায় ফিরে আসলাম। পরের দিন থেকে আমরা জিবনের নতুন এক অধ্যায় শুরু হলো। প্রতি দিন তিথলি এসে সকালের নাস্থা করায়। এই ভাবে দিন কাটতেছে মোটা মোটি। এখন আর সিগারেট খাইনা মদ খাই না.. আবার আগের মত জিবন শুরু হলো। এদিকে তিথলি আসলো।
---এই যে শুনুন আমার যে ছোট ভাই মাত্র ক্লাস ৯ এ পড়ে তাতেই খুব পাকছে ওকে ভালো করার দ্বায়িত্ব আমি আপনাকে দিলাম। এখন ততো পারবেন নাকি। ও হ্যা, আপনার মাষ্টার্স পরিক্ষা preparation কেমন.
---হুম ভালো।
বেশ কিছু দিক কেটে গেলো। আমারো মাস্টার্স পরিক্ষা শেষ হয়ে গেল। আমি মনে মনে ভাবতেছি রেজাল্টটা বের হলে তিথলি কে প্রোপোজ করবো কারন যে মেয়েটা আমাকে এত ভালোবাসে, আমাকে খারাব থেকে এতটা ভালো করল। যার কারনে আমি নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম। সেদিন আমার পরিক্ষার রেজান্ট বের হলো। তিথলি আমার কাছে আমাকে জিঞ্জাসা করল আপনার পরিক্ষার রেজাল্ট কি?
---আমি চুপটি করে আছি।
---কি আবার ফেল করেছেন?
আমি তিথলিকে জরিয়ে ধরলাম। আর বললাম আমি তোমার জন্য আজ নতুন কিছু..... শেষ করার আগেই তিথলি আমাকে ঠেলে দিল বলল কি করছেন।
---কেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন না।
---না, আমি আপনাকে ভালোবাসি কিন্তু এভাবে না। I have boyfriend But... আপনি কখনো জানতে চাননি তাই বলা হয় নি... সব কিছু ঠিক থাকলে এতদিনে বিয়ে করে ফেলতাম। প্লিজ আমাকে ভুল বুঝবেন না।
বলেই তিথলি চলে গেল। আমি আগের মত ছ্যাকা খেয়ে এবার আর আগের মত হেলে যাইনি। কারন তিথলি শিখিয়েছে কিভাবে বাচঁতে হবে। আমি নিজের মত জিবন শুরু করলাম। চোট খাটো কয়েকটা বিজনেস শুরু করলাম। এখোন ভাবতেছি বিয়ে করবো.....
Post a Comment
0
Comments
About Me
এক সমুদ্র বালির মাঝখানে দ্বাড়িয়ে নিজেকে কেমন অসহায় লাগে, মনে হয় এখনও কত কিছু জানার বাকি। পিছনে ফেলে আশা পায়ের চিহ্ন দেখে মনে হয় কি জানলাম এত দিনে মাত্র এইটুকু। যা অথৈ সাগরের এক বিন্দু ও হবে না।
0 Comments